ব্রেকিং নিউজ
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ! বুবলীর বিস্ফোরক মন্তব্য ভীষণ বিরক্ত শাকিব ছাতকে বৈধ ও অবৈধ পৃথক দুটি গরু ছাগলের হাট নিয়ে দু’পক্ষের মাঝে চরম উত্তেজনা অসুস্থ চরমোনাই পীরকে দেখতে গেলেন জামায়াত নেতারা আবাসিক হোটেলে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে ৭ জন আটক চেয়ারম্যান তপন ও অজিত মেম্বরকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা
×

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮/৩/২০২৪, ২:৫৬:৩০ PM

দেশ ফ্যাসিস্ট এবং বর্ণবাদীর কবলে পড়েছে : মির্জা ফখরুল

বাংলাদেশ এখন বর্ণবাদীদের কবলে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের মিলনায়তনে বিএনপি’র উদ্যোগে ‘মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে’ আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশ এখন বর্ণবাদীদের কবলে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের মিলনায়তনে বিএনপি’র উদ্যোগে ‘মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে’ আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আমার কাছে মনে হয়, বাংলাদেশ শুধু ফ্যাসিস্টদের কবলে পড়েনি, বাংলাদেশ এখন বর্ণবাদীদের কবলে পড়েছে। আমাদের বিএনপি যারা করে তাদের ঘর-বাড়ি পর্যন্ত দখল করে নেয়া হচ্ছে, বিএনপি যারা করে তাদের জমি দখল করে নেয়া হচ্ছে, তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য দখল করে নেয়া হচ্ছে, তাদের ছেলেমেয়েদেরকে চাকরির কোনো সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। এমনকি দুঃসম্পর্কের আত্মীয় যারা আছে তাদেরকে বিএনপি হিসেবে চিহ্নিত করে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এটা বর্ণবাদ ছাড়া কিছু নয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বসে থাকতে পারে না। বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতাকামী মানুষ। স্বাধীনভাবে কথা বলতে চায়। এটা বাংলাদেশের মানুষের চরিত্র এবং তারা রাজনৈতিকভাবে সচেতন। গ্রামে-গঞ্জে চায়ের দোকানে বসে তারা রাজনীতির কথা বলে। এটা হচ্ছে বাস্তবতা।

এই বর্তমান বাস্তবতাকে সামনে নিয়ে, বিশ্ব প্রেক্ষিতকে সামনে নিয়ে, সামগ্রিক অবস্থাকে সামনে নিয়ে আমাদের রাজনীতি, আমাদের কৌশল আবারো সেভাবে এগিয়ে নিতে হবে, যেভাবে গত দিনগুলোতে এগিয়েছি। সকলকে মনে রাখতে হবে, সংগ্রামের কোনো বিকল্প নেই, আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই এবং গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করা, ভোটের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করা তার কোনো বিকল্প নেই। সেজন্য সেই সংগ্রাম আমাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমাদের শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তোলে সেই সংগ্রামকে আরও বেশি জোরদার করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আজকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে। বর্তমান শাসকগোষ্ঠী আওয়ামী লীগ অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এই কাজটি করছে। আওয়ামী লীগ সব সময়ই গণতন্ত্রের বিরোধী শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। তারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বলেছে, কিন্তু সব সময় গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে কাজ করেছে।
ফখরুল ইসলাম বলেন, গত নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে, দেশে জনগণের অধিকারকে প্রয়োগ করতে দেয়া হয় না। অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে গত ১৫ বছর ধরে নির্বাচনকে তারা ক্ষমতার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তারা কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। বরং আমরা যারা গণতন্ত্র, নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং দেশের অর্থনীতিকে প্রতিষ্ঠিত করার কথা বলেছি, তাদের ওপর চরম দমন-পীড়ন ও নির্যাতন নেমে এসেছে।

তিনি আরও বলেন, দেশটাকে তারা ‍দুইটি ভাগ করে ফেলেছে। একটা ভাগ হচ্ছে আওয়ামী লীগ, আরেকটা ভাগ হচ্ছে বিরোধী দল। এই অবস্থা তৈরি করে তারা এই দেশকে নিজেরাই সাম্প্রদায়িক একটা অবস্থা তৈরি করেছে। তারা আবার দাবি করে, কালকেও বলেছে যে, সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে তাদের নাকি এই জিহাদ সব সময় অব্যাহত থাকবে। যারা সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করে, যারা নিজেরা গোষ্ঠী তৈরি করেছে, বর্ণবাদ সৃষ্টি করছে তাদের মুখে একথা শোভা পায় না। শুধু কথা বলে মানুষের সম্পদ লুট করে, মানুষজনকে সর্বস্বান্ত করে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করা যায় না।
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার পদক্ষেপগুলোও তুলে ধরে তিনি বলেন, দেখবেন যা কিছু বাংলাদেশে শুভ কাজ হয়েছে তা বিএনপি’র নেতারাই করেছেন।

তরুণ সমাজকে জেগে ওঠার আহ্বান রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, চলমান আন্দোলনে এত ত্যাগের পরেও আমার কাছে মনে হয় তরুণদেরকে আরও শক্ত করে জেগে উঠতে হবে, যুবকদেরকে জেগে উঠতে হবে। ২৮ তারিখের ঘটনার পরে আমার কাছে মনে হয়েছে যে, আমরা তরুণদেরকে বোধহয় সেভাবে নামাতে পারিনি। আমার কাছে মনে হয়েছে, মানুষকে জাগিয়ে তোলা এটা এখন আমাদের প্রধান কাজ। আমাদের একমাত্র মনে হয়, মানুষকে আবারো সংগঠিত করতে হবে, জনগণকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, নিজের অধিকারের জন্য, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তাদেরকে অবশ্যই রুখে দাঁড়াতে হবে।

বিএনপি’র প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, এডভোকেট ফজলুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির প্রমুখ। এ ছাড়া বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুসহ দলটির সিনিয়র নেতা এবং অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।